বাচ্চা_প্রেমিক
মৌ : এই যে মিস্টার কখন থেকে ডাকছি গায়ে লাগে না।
রনি : মানেটা কি? আমার একটা নাম আছে।
মৌ : হ্যা হ্যা জানি, রনি।
রনি : তাহলে নাম ধরে ডাকলেই পারেন।
মৌ : হয়েছে, আমার সাথে বাসায় চলেন মা ডেকেছে
রনি : তাজ্জব জানা নেই সোনা নেই একটা পিচ্চির কথায় তার সাথে যাবো অতটা পাগোল আমি নই।
মৌ : কি আমি পিচ্চি, দারারে তবে। ভাই দেখেন আমার স্বামি আমার সাথে রাগ করে চলে আসছে। এখন আর বাসায় যেতে চাচ্ছে না।
রাস্তার লোক গুলো রনিকে জোর করে মৌয়ের গাড়িতে তুলে দেয়।
মৌদের বাসা :
মৌ : মা কোথায় গেলে তোমার ব্যাক্কলেরে ধরে আনছি।
মৌয়ের মা : মা তোকে কত বলছি কথা একটু ভালো ভাবে বলবি। মানুষ সুনলে কি বলে। তা বাবা কেমন আছো।
রনি : (রাগ চেপে) ভালো থাকতে দিলেন কোথায়। গুন্ডা দিয়ে তুলে এনে জিজ্ঞাস করছেন কেমন আছেন। তার ওপরে রাস্তায় যে অপমানটা করল আপনার মেয়ে। কপাল ভালো মাইর খাই নি। বিকালের টিউসন গুলো মিস হলো, তার ওপরে আজ আবার টাকা পেতাম। কিভাবে যে মেসে যাবোবো তাই ভাবছি।
মৌয়ের মা : বাবা কিছু মনে করো না। মেয়েটা খুব জেদি। আসলে ওর বাবার জন্য মেয়েটা বিগরে গেছে। আর যে জন্য তোমায় ডাকা। মৌ এবার এস এস সি পরিক্ষা দিবে। তোমার কথা সুনে তোমাকে আমিই ডাকতে পাঠিয়ে ছিলাম। আজ থেকে তুমি শুধু মৌকে পড়াবে। আমাদের বাড়িতেই থাকবে। টাকা নিয়ে চিন্তা করবে না। তোমাকে মাসে বিশ হাজার টাকা দেয়া হবে। তোমার বাড়ির জাবতিয় খরচ আমি সামলাব তুমি শুধু মেয়েটাকে একটু পড়াবে।
রনি :( অবাক হয়ে) আন্টি টাকা আমার দরকার তা ঠিক। কিন্তু নিজেকে বিক্রি করতে কেমন যেন মন চাইছে না। তাছারা অন্য স্টুডেন্টদেরও ত পড়াতে হবে। এত দিন তাদের টাকায় আমার পেট চল ত।
মৌ : (হাতে বন্দুক নিয়ে) কে পড়াবে না মা। তুমি যাও আমি দেখছি। এ রকমের দু একজনকে মেরে পুতে রাখার মত জায়গা আমাদের বাড়ির ভিতরে আছে।
রনি : (ভয় পেয়ে) পড়াব ত।
দুদিন পরে মৌয়ের পড়ার টেবিলে :
মৌ : (চোখ মেরে) কি ক্যাবলাকান্ত কেমন দিলাম। (চিমটি) ব্যাথা পেলেন বুঝি। সব খুলে বলছি। আমার সাথে আপনার ছাত্রি তিথির সাথে বাজি হয়েছে। সে বলেছে আপনাকে নাকি চাইলেই টিউটর হিসেবে পাওয়া যাবে না তাই আর কি। আরো বাজি আছে অবস্য। তা বলা যাবে না।
রনি : ঠিকাছে পড়তে বসো।
কিছু দিন পর রনির জর আসে, ভাইরাল ফিবার।
মৌ : স্যার পড়াবেন না। রনি চুপচাপ সুয়ে আছে দেখে মৌ তার কপালে হাত দেয়। দেখতে পায় রনির জর।
রনি রাতের বেলা ঘুম ভেয়ে বুকের উপরে ওজন অনুভব করে। চেয়ে দেখে মৌ তার বুকের উপরে সুয়ে আছে। রনি চাইলেও সরাতে পারছে না। চোখটা আবার বন্ধ হয়ে এলো। তিন দিন পর রনির জ্ঞান ফেরে। চোখ খুলে সে অবাক হয় তার রুমের দিকে তাকিয়ে। ছোট খাট ক্লিনিক। আর মৌয়ের চোখে ডার্ক সার্কেলটা স্পষ্ট হয়ে আছে।
মৌ : কেমন লাগছে এখন। একটু সুপ খাবেন না ফল কেটে দিব। আচ্ছা মাথা কি ব্যাথা করছে?
রনি : এতটা ব্যস্ত হবে না। আমি ঠিক আছি। তুমি এবার একটু ঘুমাও। তোমার চোখ বলছে তুমি ঘুমাও নি। এবার একটু ঘুমাও।
মৌ : আচ্ছা ঘুমাচ্ছি তবে আপনার রুমেই রকিং চেয়ারে ঘুমাচ্ছি কিছু লাগলেই ডাক দিবেন।
রনি টিনেজ মেয়েটির দুস্টামি দেখেছে এত দিন এখন তার ভালোবাসা দেখে অবাক হচ্ছে। কি না করেছে মেয়েটি। আবার মনে মনে ভাবছে, বড় লোকের বেটি এদের আবার সব কিছুতেই বাড়া বাড়ি।
এক সপ্তাহ পরে রনি তার গ্রামের বাড়ি যেতে চাইলে মৌ বেকে বসে। রনি কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। মৌ কে ম্যানেজ করে অনেক কষ্টে বাড়িতে গেলো। ফিরে এসে যা দেখল তার জন্য রনি প্রস্তুত ছিল না।
রনি : মৌ তোমার হাতে কি হয়েছে? ব্যান্ডেজ কেনো?
মৌ : ও কিছু না। আপনার শরীর কেমন তাই বলুন।
রনি মৌয়ের মায়ের কাছে জানতে পারে সব কিছু। রনির আসতে একদিন দেরি হওয়াতেই মেয়েটা এমন করেছিল। রনি সব বুঝতে পেরেও কিছুই করতে পারছিল না। মৌ মানসিক ভাবে অসুস্থ। মেয়েটার জেদের কারনে এই অবস্থা। রনি চাচ্ছে মৌকে সুন্দর একটা জিবন দিতে। রনি মৌয়ের সামনেই ব্লেড দিয়ে নিজের হাতে কয়েকটি টান দেয়। নিমিসেই রক্তে ভরে যায় টেবিল।
মৌ :( কাদো কাদো হয়ে) এমনটি করলেন কেনো। ডাক্তারের কাছে চলুন।
রনি : তুমি করলে কেনো তার জবাব দাও আগে
মৌ : ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি।
রনি : আমি ভালোবাসি না,কোনো মানসিক রোগিকে ত নয়ই। যদি ভালো রেজাল্ট করতে পারো তবেই আমার সাথে শুধু কথা বলতে পারবে অন্যথায় তাও না।
মৌ ভালো রেজাল্ট করে। রনি খুব খুসি হয়। মৌ কি চায় জিজ্ঞেস করতেই, অবাক করার মত একটা জিনিস চেয়ে বসে।
রনি : কি চাই তোমার
মৌ : আপনাকে চাই। তবে কথা বলতে পারবেন না শুধু পাসে পাসে থাকবেন।
রনি : তোমাকে কথা দিয়েছিলাম। তার ব্যতিক্রম করব না।
মৌ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবে এটা কি প্রেম নাকি সর্তের পুরুষ্কার। মৌ ত রনিকে ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু রনি বুঝতে চাইছে না কেনো।
দশ বছর পরে :
রনি আর মৌ এর সংসারে ফুট ফুটে একটা রাজকন্যা আসে। রনি আজ পর্যন্ত কথা বলেনি। কিন্তু আজ তার বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে। সে দিনের পিচ্চি মেয়েটি আর একটি পিচ্চির মা হয়েছে। আজ সে মৌ এর হাত ধরে অনেক কান্না করেছে। মৌ তাকে বুকে জড়িয়ে কাদছে আর :
মৌ : আমার থেকে বাবুকে বেশি ভালোবাসবে না ত
রনি : নারে পাগলি। বাবুকে ত আদরই করব না।
মৌ : না বাবুকে আমাকে দু জনকেই সমান ভালোবাসতে হবে
অত:পর সেই পিচ্চির ভালোবাসায় রনির মন সিক্ত হলো। তবে সে আর কাউকে কখনোই পিচ্চি বলবে না বলে প্রমিজ করেছে।
নতুন নতুন ভালোবাসার গল্প পড়তে ভিজিট করুনwww.valobasargolpo2.xyz
ReplyDelete